রামগড় সরকারি কলেজে শিক্ষার করুণ চিত্র: শিক্ষকের ফেসবুক পোস্টে হতবাক নেটিজেনরা

0


 খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার মান নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন উঠেছে। কলেজের প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতায় অসংলগ্ন ও ভুল উত্তর দেখা যায়। এই পোস্টটি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক তার ফেসবুক পোস্টে দুটি ভিন্ন পরীক্ষার খাতার ছবি শেয়ার করেছেন। প্রথম ছবিতে দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থী চারটি প্রশ্নের উত্তরে আঁকাবাঁকা দাগ টেনেছে এবং নিচে লিখেছে, "লিখতে কষ্ট হয় তাই ভয়েস দিলাম শুয়ে নম্বর দিয়ে দিয়েন।" এরপর লাল কালিতে পরীক্ষকের মতো করে লেখা হয়েছে, "নাম্বার দিলাম।"

দ্বিতীয় ছবিতে আরও হতাশাজনক চিত্র দেখা যায়। একজন শিক্ষার্থী প্রশ্নের উত্তরে লিখেছে, "আমি পারি আর পারি না। আগে যদি মরতাম কি শান্তি হত। পরে মরলে কি ক্ষতি। আমি পারি আর পারি না।" এই উত্তরগুলো claramente demuestra que el estudiante no tenía ningún conocimiento sobre el tema del examen.

আব্দুর রাজ্জাক তার পোস্টে মন্তব্য করেছেন, "এই হলো শিক্ষার মান ও ছাত্রদের পরীক্ষার খাতায় লেখা! প্রশ্ন ছিল কী? আর উত্তর লিখলো কী?" এই মন্তব্য থেকে সহজেই বোঝা যায়, শিক্ষক কতটা হতাশ এবং উদ্বিগ্ন।

যোগাযোগ করা হলে প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "আমি নিয়মিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে গিয়ে এমন হতাশাজনক চিত্র দেখতে পাই। এটা শুধু একজন শিক্ষার্থীর সমস্যা নয়, বরং আরও অনেকের খাতায় একই ধরনের চিত্র দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোযোগের অভাব এবং শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতাই এর মূল কারণ বলে আমি মনে করি।" তিনি আরও বলেন, "বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।"

আব্দুর রাজ্জাকের এই পোস্টটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই তাদের মতামত জানিয়েছেন। বেশিরভাগ মন্তব্যকারী শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কেউ কেউ শিক্ষকদের আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ দুর্বল শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন।

এ বিষয়ে রামগড় সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।

শিক্ষাবিদদের মতে, শিক্ষার্থীদের অমনোযোগী হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে দুর্বল পারিবারিক পরিবেশ, শিক্ষকের অভাব, পাঠদানে অনাগ্রহ, পরীক্ষার ভীতি, এবং সামাজিক মাধ্যমের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি।

এই সমস্যার সমাধানে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:

* শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশন প্রদান করা।

* বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষকের ব্যবস্থা করা।

* পাঠদান পদ্ধতিকে আরও আকর্ষণীয় ও শিক্ষার্থীবান্ধব করা।

* অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপন এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করা।

* পরীক্ষার ভীতি দূর করার জন্য নিয়মিত কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করা।

রামগড় সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতার এই চিত্র শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার একটি দুর্বল দিক তুলে ধরে। কর্তৃপক্ষের উচিত জরুরি ভিত্তিতে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা না হলে, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)