Top News

বাবা জসিমের মতোই আচমকা চলে গেলেন ছেলে রাতুল


 বাবার মৃত্যু ছিল আকস্মিক, ছেলের বিদায়ও যেন সেই পথেই ঘটল। চিত্রনায়ক আবুল খায়ের জসিম উদ্দিনের মৃত্যু যেমন নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে, ঠিক তেমনি তার ছেলে এ কে রাতুলের আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দেশের সংগীত জগৎ। ‘ওনড’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার রাতুল রোববার বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।


ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক তার ভক্ত ও সহকর্মীরা। মাত্র একদিন আগেও যিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন, সেই সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষটিই রোববার বিকেলে উত্তরার একটি জিমে ব্যায়াম করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।


ব্যান্ডের গীতিকার সিয়াম ইবনে আলম জানান, অসুস্থ বোধ করার পর রাতুলকে প্রথমে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে এবং পরে লুবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। লুবনা হাসপাতালের সুপারভাইজার মাসুদের ভাষ্যমতে, ‘আমাদের হাসপাতালে নিয়ে এলে আমরা দ্রুত তাকে আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে ফেরানো যায়নি।’ এর ঘণ্টাখানেক পরেই চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


বাবার পথে অভিনয়ে না এলেও তিন ভাই মিলে সংগীত জগতে নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করেছিলেন। জসিমের তিন ছেলে—এ কে রাহুল, এ কে রাতুল এবং এ কে সামী, প্রত্যেকেই ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত। রাহুল ‘ট্রেনরেক’ ব্যান্ডের গিটারিস্ট ও ‘পরাহো’র ড্রামার, অন্যদিকে রাতুল ও সামী ছিলেন দেশের অন্যতম আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ড ‘ওনড’-এর প্রাণশক্তি।


এ কে রাতুল কেবল একজন গায়ক বা বাদকই ছিলেন না, রক সংগীতের জগতে একজন দক্ষ প্রযোজক হিসেবেও তার খ্যাতি ছিল। ‘ওনড’ ব্যান্ডের হয়ে ২০১৪ সালে ‘১’ এবং ২০১৭ সালে ‘২’ শিরোনামে দুটি জনপ্রিয় অ্যালবাম উপহার দেন তিনি, যা শ্রোতাদের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়। ২০২১ সালে প্রকাশিত তাদের ইপি ‘এইটটিন’-ও বিপুল সাড়া ফেলে। তার এই অকাল প্রয়াণ দেশের আন্ডারগ্রাউন্ড সংগীত জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করল।


দুই যুগ আগে জসিমের মৃত্যু যেভাবে ভক্তদের হৃদয়ে দাগ কেটেছিল, রাতুলের এই অবিশ্ব্যাস্য মৃত্যুও তার গানের অনুরাগীদের কাছে এক বড় ধাক্কা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন এবং তার কাজকে স্মরণ করে শোক প্রকাশ করছেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন