Top News

আমার সামনে জুনায়েদের মাথায় গুলি করে পুলিশ, ট্রাইব্যুনালকে সাক্ষী


 পুলিশের গুলিতে আমার সামনে থাকা জুনায়েদ নামের এক আন্দোলনকারী মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। ৩-৪ জন আন্দোলনকারী জুনায়েদকে রিকশায় তুলে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেদিন বিকেলের দিকে জানতে পারি, জুনায়েদ মারা গেছে।’


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এ সব কথা বলেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া মো. মনিরুজ্জামান।


আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই সাক্ষ্য নেওয়া হয়।


এদিন আরও সাক্ষ্য দেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া মো. টিপু সুলতান।


এ নিয়ে এই মামলায় সাক্ষ্য দিলেন ১৩ জন। পরে তাঁদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।


মনিরুজ্জামান জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে মালপত্র সরবরাহকারী। গত বছরের ৫ আগস্ট আমার ছেলে না বলে আন্দোলনে যোগ দেয়। তখন খুব গোলাগুলি হচ্ছিল। আমি ছেলেকে খুঁজতে নিমতলি যাই। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমি আর আমার ছেলে খলিফা পট্টি এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দিই। আমরা চানখাঁরপুলের দিকে এগোচ্ছিলাম। তখন পুলিশ গুলি করতে করতে আমাদের দিকে আসে।’


‘পুলিশের গুলিতে আমার সামনে থাকা জুনায়েদ নামের এক আন্দোলনকারী মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। ৩-৪ জন আন্দোলনকারী জুনায়েদকে রিকশায় তুলে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেদিন বিকেলের দিকে জানতে পারি, গুলিবিদ্ধ জুনায়েদ মারা গেছে। সেদিন চানখাঁরপুল এলাকায় ৫-৬ জন আন্দোলনকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার চাই।’


আন্দোলনে অংশ নেওয়া টিপু সুলতান জবানবন্দিতে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট লংমার্চ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য বাসা থেকে বের হয়ে চানখাঁরপুলে বোরহানউদ্দিন কলেজের সামনে অবস্থান নিই। ওই সময় আমাদের সঙ্গে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও অংশগ্রহণ করেন। বোরহানউদ্দিন কলেজ গেটের সামনে গেলে পুলিশ চানখাঁরপুল মোড় থেকে আমাদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলি করে।


‘পরে শুনতে পাই, নাজিম উদ্দিন রোডে সোহাগ হোটেলের সামনে আমার এলাকার বড় ভাই ইয়াকুব গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গিয়ে দেখি, ইয়াকুব ভাইয়ের পেট দিয়ে গুলি লেগে পিঠ দিয়ে বের হয়ে গেছে। তাঁর ভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। পুলিশ আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করলে তা আমার পাশে থাকা আন্দোলনকারী ইসমামুলের পেটে লেগে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। ইসমামুলকে আমি অটোরিকশায় উঠিয়ে দিলে একজন আন্দোলনকারী তাঁকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিন দিন পর সে মারা যায়। ওই দিন চানখাঁরপুলে ৬ জন আন্দোলনকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন