Top News

ইসরায়েলের হামলার কী জবাব হবে— আরব-ইসলামিক সম্মেলন ডাকল কাতার


 ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানী দোহায় জরুরি আরব-ইসলামিক সম্মেলন আহ্বান করেছে কাতার। আগামী রোববার ও সোমবার অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে ইসরায়েলি হামলা এবং এর পরিণতি নিয়ে আলোচনা হবে। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) নিহতদের জানাজায় অংশ নেন। দোহায় শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাব মসজিদে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।


এর আগে গত মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি বাহিনী দোহায় একটি ভবনে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। হামলায় পাঁচ হামাস সদস্য ও কাতারের এক নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন হামাসের শীর্ষ আলোচক খালিল আল হাইয়ার ছেলে হামান, তাঁর অফিস পরিচালক জিহাদ লাবাদ ও তিন দেহরক্ষী—আহমাদ মামলুক, আবদাল্লাহ আবদেলওয়াদ এবং মুমেন হাসসুন।


হামাস জানায়, শীর্ষ নেতারা বেঁচে গেছেন। তবে এই হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র নিন্দা ঝড় ওঠে।

কাতার ও মিশর দীর্ঘদিন ধরে গাজা যুদ্ধ থামাতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতা করছে। হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরও দোহায় অবস্থিত। এ অবস্থায় কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই হামলার মাধ্যমে জিম্মিদের মুক্তির সম্ভাবনাকে ‘হত্যা করেছেন’। জাতিসংঘে ভাষণের আগে তাঁর এমন মন্তব্য উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর ক্ষোভকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।

নেতানিয়াহু কাতারকে সতর্ক করে বলেন, তারা যেন হামাস কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করে বা বিচারের মুখোমুখি করে, নইলে ইসরায়েল ব্যবস্থা নেবে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে ‘রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের স্পষ্ট হুমকি’ বলে আখ্যা দেয় এবং নিন্দা জানায়। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, হামাসের অফিস খোলার অনুমতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অনুরোধেই দেওয়া হয়েছিল এবং সব আলোচনা আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে হয়েছে।


সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাতারের প্রধানমন্ত্রী জানান, তাদের সরকার বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আলোচনায় রয়েছে।


এদিকে, ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের দূত ইয়েচিয়েল লেইটার মন্তব্য করেছেন—এবার ব্যর্থ হলেও পরেরবার তারা হামাস নেতাদের হত্যা করতে সক্ষম হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস কমপ্লেক্সে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘যেখানেই থাকুক, সন্ত্রাসীদের ধ্বংস করা হবে।’


তবে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে এই হামলা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি এ ঘটনায় ‘অসন্তুষ্ট’। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তথ্যমতে, হামলার দিন ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে উত্তপ্ত ফোনালাপ হয় এবং ট্রাম্প ইসরায়েলের হামলাকে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন।


এদিকে কাতারে হামলার প্রতিক্রিয়ায় খোদ ইসরায়েলেই নিন্দার ঝড় উপেক্ষা করে নেতানিয়াহু পরদিনই ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ওপর নতুন বিমান হামলা চালান। সানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি স্থানে এ হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন