দিনাজপুর থেকে সিয়ামুর রশিদ, স্টাফ রিপোর্টার
শরতের নীল আকাশ, সাদা মেঘ আর হালকা বাতাস—সব মিলিয়ে প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে। সেই সাজের পূর্ণতা পেয়েছে দিনাজপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে। চারপাশে দুলছে শুভ্র কাশফুল, যা শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয় মানুষদের মুগ্ধ করছে প্রতিদিন।
সৌন্দর্যে ভরপুর ক্যাম্পাস
কলেজ মাঠের ধারে, গাছের আড়ালে কিংবা খোলা জায়গায় সারি সারি কাশফুল দুলছে বাতাসে। দূর থেকে মনে হয়, যেন তুলার আস্তর বিছিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি। শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে ছবি তুলছেন, কেউবা কাশবনে বসে উপভোগ করছেন শরতের প্রশান্তি।
শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের অনুভূতি
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর হাসান বলেন,
“প্রতিদিন ক্লাসে এসে এখন অন্য রকম প্রশান্তি অনুভব করি। কাশফুল যেন পুরো ক্যাম্পাসকে কবিতায় ভরিয়ে দিয়েছে।”
ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী মেহজাবিন সুলতানা বলেন,
“আমাদের কলেজ যেন এখন একটা প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় আমরা প্রকৃতির খুব কাছে।”
অন্যদিকে কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান বলেন,
“প্রকৃতির এ সৌন্দর্য আমাদের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ক্লাসে তাদের আগ্রহ ও মনোযোগও বাড়ছে।”
স্থানীয়দের ভালোবাসা
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিনুর রহমান বলেন,
“আগে শুধু কলেজের ছাত্র-শিক্ষকরাই আসতেন, এখন আমরা আশপাশের মানুষও ছুটে আসি কাশফুল দেখতে। এটা দিনাজপুরের মানুষের জন্য গর্বের।”
কলেজ কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা
কাশফুল মৌসুমকে ঘিরে কলেজ কর্তৃপক্ষও কিছু প্রকল্প হাতে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রাশেদুল করিম বলেন,
“আমরা চাই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সুরক্ষিত রাখতে। এজন্য বিশেষ পরিচর্যা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘প্রকৃতি ও সাহিত্য’ ক্লাব গঠন, কাশফুলকেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে কাশফুলের এই মৌসুমকে ঘিরে দিনাজপুর সরকারি কলেজকে একটি পর্যটনবান্ধব স্পট হিসেবে গড়ে তোলার দিকেও ভাবছে কর্তৃপক্ষ।
মানবিক বার্তা
কাশফুলের এই শুভ্রতা যেন শুধু প্রকৃতির নয়, মানুষের মনকেও নির্মল করছে। শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস, শিক্ষকদের গর্ব আর স্থানীয়দের ভালোবাসা মিলিয়ে ক্যাম্পাসে এখন এক অন্য রকম প্রাণচাঞ্চল্য।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন