Top News

গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার নিয়ে পুলিশের ওপর হামলায় ৩,৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা


 রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলা’র দরবার শরীফে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অজ্ঞাত তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। শনিবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. শরীফ আল রাজীব।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফকীর মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে এক সভার আয়োজন করা হয়। সভা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দরবারের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ ও প্রশাসন তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। সে সময় বিক্ষোভকারীরা গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসি’র গাড়ি ভাঙচুর করে এবং পাঁচজন পুলিশ সদস্যসহ প্রশাসনের অন্তত সাতজনকে পিটিয়ে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আহত করে। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৫০ জন।

পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধ জনতা দরবার শরীফের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভবন ও অন্যান্য স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। এক পর্যায়ে তারা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার কবর খুঁড়ে মরদেহ উত্তোলন করে এবং সেটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় নিয়ে গিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।


এ ঘটনায় গুরুতর আহত রাসেল মোল্লা (২৮) নামের একজন শুক্রবার রাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের যতু মিস্ত্রিপাড়ার আজাদ মোল্লার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট নুরাল পাগলা মৃত্যুবরণ করেন। তার অনুসারীরা তাকে দরবার চত্বরে দাফন করে এবং তার কবরের ওপর কাবা শরীফের অনুরূপ একটি স্থাপনা নির্মাণ করে। এ নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা এই নির্মাণকে ধর্মীয় বিধি-বিধানের পরিপন্থী বলে দাবি করে।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হবে।

শনিবার সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোহ পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে বর্তমানে এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন