সিয়ামুর রশিদ, স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর)
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ব্যস্ততম রোড বাজারে ভোরের দিকে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয়রা জানান, প্রথমে এক রিকশাচালক বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে দেখে ধোঁয়া লক্ষ্য করেন। পরে তিনি দ্রুত ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
অগ্নিকাণ্ডে মুদিখানা, টেইলার্স, ইলেকট্রনিক্স, জুতার দোকান ও একটি গুদামসহ মোট ৮টি দোকান সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান—
দুর্গাপূজা সামনে রেখে নতুন জুতার স্টক তুলেছিলেন তারা, যা মুহূর্তে ছাই হয়ে গেছে।
টেইলার্সে গ্রাহকদের জন্য সেলাই দেওয়া নতুন পোশাকসহ সমস্ত কাপড় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
মুদিখানার চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে সাবান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছু আগুনে ধ্বংস হয়েছে।
গুদামে রাখা পণ্যসামগ্রীও কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত
বাজারে কোনো পানির রিজার্ভার না থাকায় শুরুতে ফায়ার সার্ভিসকে বিপাকে পড়তে হয়। দূরবর্তী নদী থেকে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়েছে। এলাকাবাসী মনে করেন, এ ধরনের ব্যস্ত ও ঘনবসতিপূর্ণ বাজারে অবিলম্বে পানির রিজার্ভার স্থাপন করা জরুরি।
ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য
ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইন্সপেক্টর মোজাম্মেল হক বলেন,
“খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। দোকানগুলোতে দাহ্য পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পানির অভাবে শুরুতে সমস্যায় পড়লেও শেষ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।”
জেলা প্রশাসকের প্রতিক্রিয়া
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা জানান,
“বাজারে পানির রিজার্ভার না থাকায় আগুন নেভাতে বিলম্ব হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বাজারে পানির রিজার্ভারের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের তালিকা তৈরি করে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।”
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে অর্ধকোটি টাকার বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন