ভারতের রাজধানী দিল্লির ২০টিরও বেশি স্কুলে বোমা হামলার হুমকি দিয়ে ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে পাওয়া এ বার্তাগুলোয় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। হুমকি পাওয়ার পরপরই পুলিশ ও বোম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে। যদিও এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির বরাতে জানা গেছে, পশ্চিম বিহারের রিচমন্ড গ্লোবাল স্কুলসহ রাজধানী দিল্লির একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের হুমকি আসে। হুমকির বার্তাগুলোতে বলা হয়— “আমি জানাতে চাই, আমি স্কুল ক্লাসরুমে কয়েকটি বিস্ফোরক (ট্রাই নাইট্রো টলুইন) স্থাপন করেছি। সেগুলো খুব কৌশলে কালো প্লাস্টিকের ব্যাগে লুকানো আছে। আমি পৃথিবী থেকে তোমাদের সবাইকে মুছে ফেলব। কেউ বাঁচবে না।”
ই-মেইলে আরও লেখা ছিল, “তোমরা সবাই যন্ত্রণা পাওয়ার যোগ্য। আমি জীবনটাকে ঘৃণা করি। এই খবর দেখার পর আত্মহত্যা করব... আমার গলা আর কবজি কেটে ফেলব। মানসিক সমস্যায় আমি কখনো সাহায্য পাইনি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা কেবল ওষুধ দেয়, যা শরীর নষ্ট করে দেয়। আমি প্রমাণ যে এসব ওষুধ কাজ করে না।”
দিল্লি পুলিশ জানায়, ই-মেইলের ভাষা চরম সহিংস ও মানসিক ভারসাম্যহীন একজন ব্যক্তির লেখা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে বিভিন্ন স্কুলে তল্লাশি শুরু করেছে। ঘটনাগুলোর তদন্তে সাইবার বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।
তদন্তকারীরা বলছেন, এই হুমকিগুলোর পেছনে কোনো সংগঠিত চক্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত তিন দিনের মধ্যেই দিল্লির প্রায় ১০টি স্কুল ও একটি কলেজ একই ধরনের হুমকি পেয়েছে।
হুমকির তালিকায় রয়েছে—
সেন্ট থমাস স্কুল (দ্বারকা)
ভাসন্ত ভ্যালি স্কুল (ভাসন্ত কুঞ্জ)
দ্য মাদারস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (হাউজ খাস)
রিচমন্ড গ্লোবাল স্কুল (পশ্চিম বিহার)
সরদার প্যাটেল বিদ্যালয় (লোধি এস্টেট)
সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ (দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়)
বৃহস্পতিবার ই-মেইলে বোমার হুমকি পাওয়ার পর সরদার প্যাটেল বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একইভাবে সেন্ট স্টিফেন্স কলেজেও লাইব্রেরিতে বোমা রাখার হুমকি আসে। তল্লাশিতে কোথাও কোনো বিস্ফোরক মেলেনি।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত সোমবারও চানক্যপুরী ও দ্বারকা এলাকার দুটি স্কুলে একই ধরনের বার্তা পাঠানো হয়েছিল। তবে প্রতিবারই বিস্ফোরকের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি।
বর্তমানে পুলিশ ই-মেইলগুলোর উৎস শনাক্তে কাজ করছে এবং নিরাপত্তা জোরদার রাখতে সব স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।